সরকারি ভাবে জাপান যেতে চাচ্ছেন? সরকারিভাবে জাপান যেতে চাইলে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়তে হবে। কারণ, আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে সরকারি ভাবে জাপান যাওয়ার উপায় এবং জাপানে বেতন কত টাকা তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
তাই, আপনি যদি জাপান গিয়ে টাকা উপার্জন করতে চান এবং কোনো দালাল বা এজেন্সির সহযোগিতা না নিয়ে সরকারি উদ্যোগে জাপান যেতে চান, তাহলে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ অব্দি সম্পূর্ণ পড়ুন। তো চলুন, পোস্টের মূল বিষয়ে ফিরে আসা যাক।
চীন, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, মঙ্গোলিয়া, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম এর পাশাপাশি কয়েক বছর যাবত বাংলাদেশ থেকেও জাপানে শ্রমিক নিচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় জাপান গিয়ে কাজ করে টাকা উপার্জন করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই জাপানের ভাষা শিখতে হবে।
জাপানের ভাষা শেখার জন্য বাংলাদেশ কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) তে কোর্স করতে পারেন। কারণ, এখানে তারা জাপান যেতে ইচ্ছুকদেরকে ফ্রিতে জাপানি ভাষা শেখার প্রশিক্ষন দিচ্ছে। বিএমইটির অধীনে মোট ২৬ টি প্রশিক্ষন কেন্দ্রে জাপানি ভাষা শেখার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আপনি সরকারি ভাবে জাপান যেতে চাইলে অবশ্যই জাপানি ভাষার প্রশিক্ষন নিয়ে রাখবেন।
জাপানিজ ভাষা শেখার জন্য নিম্নে উল্লিখিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো থেকে ভাষা শিখতে পারেন :
জাপানিজ ভাষা ট্রেনিং নেয়ার পর আপনাকে জাপানের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন করার পর আপনি সরকারিভাবে জাপান যেতে পারবেন। সরকারি ভাবে জাপান যাওয়ার উপায় ও জাপান যেতে কি কি লাগে তা নিয়ে আরও বিস্তারিত নিচে আলোচনা করেছি।
সরকারি ভাবে জাপান যেতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই কিছু শর্ত মানতে হবে এবং আপনার কাগজপত্র থাকতে হবে। সরকারি ভাবে জাপান যাওয়ার জন্য কি কি লাগবে তার একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করে দিলাম।
উপরোক্ত এই জিনিসগুলো হলে আপনি সরকারিভাবে জাপান যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন করতে পারবেন। জাপানের ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পর ভিসা আবেদন করতে হবে। ভিসা পেয়ে গেলে ফ্লাইট টিকেট কেটে আপনি জাপান যেতে পারবেন। সরকারিভাবে জাপান যেতে কত টাকা লাগে তা নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
সরকারিভাবে যেকোনো দেশে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে অনেক কম খরচ হয়। আপনি যদি সরকারি ভাবে জাপান যেতে চান, তবে মাত্র ৩-৪ লক্ষ টাকার মাঝেই জাপান যেতে পারবেন। আপনি যদি কোনো এজেন্সির সহযোগিতা নেন বা কোনো দালালের সহযোগিতা নেন, সেক্ষেত্রে ৬-৮ লক্ষ টাকা হলেও জাপান যেতে পারবেন না।
তাই, জাপান যেতে চাইলে অবশ্যই সরকারিভাবে জাপান যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন করুন। সরকারি ভাবে জাপান যাওয়ার উপায় হচ্ছে বিএমইটি থেকে যেকোনো কাজের উপর প্রশিক্ষন নেয়া এবং জাপানিজ ভাষা শেখার পর জাপানের ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে ভিসা আবেদন করা। ভিসা পেয়ে গেলে জাপান যেতে পারবেন সহজেই।
জাপানে বেতন নির্ভর করে অনেকগুলো বিষয়ের উপর। যেমন: কর্মীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, কাজের ধরন, কোম্পানির অবস্থান ইত্যাদি। তবে সাধারণভাবে বলতে গেলে, জাপানে বেশ ভালো বেতনে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
জাপানের শ্রম আইন অনুযায়ী, একজন কর্মীর ন্যূনতম বেতন ঘণ্টায় ¥930 (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭০০ টাকা)। কর্মীরা দিনে ৮ ঘণ্টা কাজ করতে পারেন। সে হিসাবে একজন কর্মী মাসে পাবেন ¥142,400 (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা)। তবে এই বেতন সাধারণত অভিজ্ঞতাহীন কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
অভিজ্ঞ কর্মীদের বেতন আরও অনেক বেশি হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একজন প্রকৌশলীর বেতন মাসে ¥500,000 (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা) থেকে শুরু। একজন ডাক্তারের বেতন মাসে ¥1,000,000 (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা) থেকে শুরু।
জাপানের বিভিন্ন শহরের মধ্যে বেতনের পার্থক্যও রয়েছে। সাধারণত টোকিও, ওসাকা, ইত্যাদি বড় শহরগুলিতে বেতন বেশি হয়। নিচে জাপানের কিছু সাধারণ পেশার বেতন উল্লেখ করে দিলাম।
পেশা | বেতন (মাসে) |
কর্মচারী | ¥200,000 (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) |
প্রকৌশলী | ¥500,000 (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা) |
ডাক্তার | ¥1,000,000 (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা) |
শিক্ষক | ¥400,000 (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা) |
পুলিশ অফিসার | ¥300,000 (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা) |
সেলসম্যান | ¥250,000 (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা) |
উল্লেখ্য যে, এই বেতনগুলি শুধুমাত্র ধারণা দেওয়ার জন্য। প্রকৃত বেতন নির্ভর করবে অনেকগুলো বিষয়ের উপর। কাজের প্রতি আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে বেতন কম বা বেশি হতে পারে।
সরকারি ভাবে জাপান যেতে চাইলে ওয়ার্ক পারমিট থাকতে হবে। জাপান যাওয়ার জন্য নিচে উল্লিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন। তাহলে, সরকারিভাবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় জাপান যেতে পারবেন।
জাপান যেতে চান এমন মানুষের সংখ্যা কম না। আপনিও যদি জাপান যেতে চান, তবে নিশ্চয়ই জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশি এই প্রশ্নটি একবার হলেও মাথায় এসেছে। জাপানে যেসব কাজের চাহিদা সবথেকে বেশি সেসব কাজের বেতনও বেশি হয়ে থাকে। এসব কাজের ভিসা নিয়ে জাপান যেতে পারলে অল্প সময়ে অধিক অর্থ উপার্জন করা সম্ভব হবে।
নিচে জাপানে যেসব কাজের চাহিদা সবথেকে বেশি সেগুলোর একটি তালিকা উল্লেখ করে দিলাম। দেখে নিতে পারেন।
উপরোক্ত কাজগুলোর উপর বিএমইটি (BMET) থেকে প্রশিক্ষন নেয়ার পর বিএমইটি থেকে জাপানে কাজের জন্য ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন করতে পারেন। এরপর, ওয়ার্ক পারমিট পেয়ে গেলে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। ভিসা হলে আপনি জাপান যেতে পারবেন।
অবশ্যই কাজের উপর দক্ষতা অর্জন করার সময় জাপানিজ ভাষা শিখতে হবে। জাপানিজ ভাষা না জানলে জাপান যেতে পারবেন না।
আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে সরকারি ভাবে জাপান যাওয়ার উপায় এবং জাপান যেতে কত টাকা লাগে সহ জাপানে বেতন কত টাকা এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
Leave a Reply