পোল্যান্ড ভিসা পাওয়ার নিয়ম এবং পোল্যান্ড কোন কাজে বেতন কত টাকা এসব বিষয় নিয়ে আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে পোল্যান্ড যেতে চান এবং পোল্যান্ড গিয়ে কাজ করে টাকা উপার্জন করতে চান, তবে এই পোস্টটি আপনার জন্যই। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে পোল্যান্ড টাকার রেট সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে পারবেন।
পোল্যান্ড হচ্ছে শেনজেন এর অন্তর্ভুক্ত ২৭টি দেশের মাঝে একটি দেশ। তাই, আপনি যদি পোল্যান্ড ভিসা করতে চান, তবে আপনাকে শেনজেন ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। শেনজেন ভিসা পেয়ে গেলে আপনি শেনজেন অন্তর্ভুক্ত ২৭টি দেশেই যাতায়াত করতে পারবেন।
তবে, আপনি যদি পোল্যান্ড যাওয়ার জন্য শেনজেন ভিসা করেন, তবে পোল্যান্ড যেতে হবে এবং পোল্যান্ড থেকেই ফেরত আসতে হবে। অর্থাৎ, আপনি শেনজেন অন্তর্ভুক্ত অন্য দেশগুলোতে সরাসরি প্রবেশ করতে পারবেন না বা সেই দেশ থেকে নিজের দেশে আসতে পারবেন না। এজন্য, অবশ্যই যে দেশের ভিসা করেছেন, সেই দেশ থেকে যাতায়াত করতে হবে।
পোল্যান্ড ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে পোল্যান্ড ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। পোল্যান্ড ভিসা আবেদন করার জন্য পোল্যান্ড যেতে যা যা লাগবে সেগুলো সংগ্রহ করতে হবে। এরপর, অনলাইন থেকে পোল্যান্ড ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে এবং পোল্যান্ড এম্বাসিতে কিংবা সুইডেন এম্বাসিতে অ্যাপয়েনমেন্ট বুকিং করে আবেদন জমা দিতে হবে।
তাহলে, আপনি পোল্যান্ড ভিসা আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন এবং পোল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে পোল্যান্ড যেতে পারবেন। পোল্যান্ড যেতে কি কি লাগবে তার একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করে দিয়েছি। চলুন, দেখে নেয়া যাক।
পোল্যান্ড যেতে চাইলে কি কি লাগে বা পোল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে চাইলে কি কি লাগে তার একটি বিস্তারিত তালিকা নিচে উল্লেখ করে দিয়েছি। পোল্যান্ড ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন করার করার আগে অবশ্যই এসব কাগজপত্র সংগ্রহ করে রাখতে হবে।
উপরোক্ত কাগজগুলো যদি আপনার কাছে থাকে, তাহলে পোল্যান্ড ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। অনলাইনে পোল্যান্ড ভিসার জন্য আবেদন করার নিয়ম বিস্তারিত নিচে পেয়ে যাবেন।
পোল্যান্ড ভিসা পাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন করতে হবে। পোল্যান্ড ভিসা আবেদন করার জন্য কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে। এসব ধাপ নিচে বিস্তারিত উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। পোল্যান্ড ভিসা পেতে চাইলে নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করুন।
ধাপ ১ – পোল্যান্ড ভিসা আবেদন করার জন্য অনলাইনে পোল্যান্ড এম্বাসিতে আবেদন করতে হবে। বাংলাদেশে পোল্যান্ড এর কোনো এম্বাসি নেই। তাই, পোল্যান্ড ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে ভারতের পোল্যান্ড এম্বাসি থেকে আবেদন করতে হবে। এজন্য, Poland Visa Application Form, New Delhi লিংকটি ব্যবহার করতে পারবেন।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ছাড়া স্বল্প মেয়াদি অন্য যেকোনো ভিসা যেমন ট্রাভেল ভিসার জন্য আবেদন করতে চাইলে শেনজেন ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। শেনজেন ভিসা পেলে আপনি শেনজেন এর অন্তর্ভুক্ত ২৭টি দেশে যাতায়াত করতে পারবেন আলাদা কোনো ভিসা ছাড়াই।
ধাপ ২ – পোল্যান্ড ভিসার জন্য অনলাইনে ভিসা আবেদন ফরম পূরণ করার পর আপনাকে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং করতে হবে। পোল্যান্ড এম্বাসির অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং করার জন্য https://visa.vfsglobal.com/ind/en/pol/ এই ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে। এরপর, Book an Appointment এ ক্লিক করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে পারবেন।
ধাপ ৩ – পোল্যান্ড এম্বাসির অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করার পর আপনাকে পোল্যান্ড এম্বাসিতে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ভিসা আবেদন জমা দিতে হবে এবং ভিসা ফি জমা দিতে হবে। সাথে আপনার বায়োমেট্রিক তথ্য যেমন আঙ্গুলের ছাপ ইত্যাদি নিবে।
ধাপ ৪ – ভিসা আবেদন জমা দেয়া হয়ে গেলে ভিসা আবেদন অনুমোদন হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ভিসা আবেদন একবার অনুমোদন হয়ে গেলে পাসপোর্ট এবং ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। এরপর, পাসপোর্ট ও ভিসা নিয়ে আপনি পোল্যান্ড যেতে পারবেন।
পোল্যান্ডে বেতন মূলত কাজের ধরন, অভিজ্ঞতা, এবং দক্ষতার উপর নির্ভর করে থাকে। সাধারণত, পোল্যান্ডে বেতন প্রতি মাসে প্রায় ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ পোলিশ জ্লোটিতে (PLN) হয়ে থাকে।
পোল্যান্ডে বেতন বেশি এবং জনপ্রিয় এমন কিছু কাজের তালিকা ও সেসব কাজের বেতন প্রতি মাসে কত টাকা তার একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করে দিলাম।
পোল্যান্ডে বেতন সাধারণত মাসিক বেতন হিসেবে প্রদান করা হয়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে সাপ্তাহিক বা দৈনিক বেতনও প্রদান করা হয়। পোল্যান্ডে ন্যূনতম বেতন প্রতি ঘন্টায় ১২.৫০ PLN। অর্থাৎ, একজন কর্মী প্রতি মাসে কমপক্ষে ১৫,০০০ PLN ইনকাম করতে পারে।
পোল্যান্ডে বেতন সাধারণত প্রদান করা হয় পোলিশ জ্লোটিতে (PLN)। তবে, কিছু ক্ষেত্রে ইউরোতেও বেতন প্রদান করা হয়। এটি কর্মক্ষেত্র বা কোম্পানির উপর নির্ভর করে থাকে।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় পোল্যান্ড যেতে ৪-৫ লক্ষ টাকা লেগে থাকে। ভিসা ফি, ফ্লাইট টিকেট, ইনস্যুরেন্স এবং আনুসাঙ্গিক খরচ সহ মোট ৪-৫ লক্ষ টাকা হলে কাজের ভিসায় পোল্যান্ড যেতে পারবেন। তবে, আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসায় পোল্যান্ড যেতে চান, তবে ১ লক্ষ টাকার মাঝেই পোল্যান্ড যেতে পারবেন।
এছাড়াও, ১.৫ থেকে ২ লক্ষ টাকার মাঝে পোল্যান্ড ট্রাভেল ভিসায় গিয়ে পোল্যান্ড ভ্রমণ করে আসা যায়। আপনি যদি পোল্যান্ড যান, তবে পোল্যান্ড থেকে আরও ২৬ টি দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন আলাদা কোনো ভিসা ছাড়াই। তবে, এজন্য আপনাকে অবশ্যই শেনজেন ভিসা নিতে হবে।
পোল্যান্ড যেতে ইচ্ছুক এমন অনেকেই পোল্যান্ড টাকার মান কত জানতে ইচ্ছুক। পোল্যান্ড এর ১ টাকা বাংলাদেশের আজকের টাকার রেট অনুযায়ী 27.99 বা প্রায় ২৮ টাকা। আপনার কাছে যদি ১টি পোল্যান্ড এর মুদ্রা থাকে, সেটির মান বাংলাদেশে ২৮ টাকার সমান। পোল্যান্ড ১০০ টাকা সমান বাংলাদেশে ২৭৯৯ টাকা।
পোল্যান্ড টাকার মান বেশি হওয়ার কারণে অনেকেই পোল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করে পোল্যান্ড গিয়ে থাকেন। এতে করে, অল্প সময়ের মাঝে অধিক টাকা উপার্জন করা যায়। এছাড়াও, পোল্যান্ড এ কাজের দাম অনেক বেশি। আপনি যদি কোনো কাজে দক্ষ হন, সেই কাজটি করে অনেক বেশি পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
পোল্যান্ড অনেক উন্নত একটি দেশ। আমাদের দেশের অনেকেই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে পোল্যান্ড যাচ্ছেন। আবার অনেকেই পড়ালেখা করার জন্য পোল্যান্ড যাচ্ছেন। আপনিও যদি পোল্যান্ড যেতে চান, তবে পোল্যান্ড ভিসা ফরম পূরণ করে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং করে ভিসা আবেদন জমা দিয়ে ভিসা নিতে পারবেন এবং পোল্যান্ড যেতে পারবেন।
এই পোস্টে আপনাদের সাথে পোল্যান্ড ভিসা পাওয়ার নিয়ম, পোল্যান্ড কোন কাজের বেতন বেশি এবং পোল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। এছাড়াও, পোল্যান্ড টাকার রেট কত এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।
Leave a Reply